ছেলে সোহেল আহমেদ ও হাজেরা বিবি। ছবি: যুগান্তর

খবর আসে মা নিখোঁজ রয়েছেন। লকডাউনে সরাসরি পরিবহণও বন্ধ। তাই উপায় না পেয়ে লকডাইনের মধ্যে বাইসাইকেলে ২৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় নিজ বাড়ি পৌঁছেছেন ছেলে সোহেল আহমেদ (২৮)।

শনিবার রাত থেকে প্রায় ১৪ ঘণ্টা সাইকেল চালানোর পর কমলগঞ্জ লঙ্গুরপাড় গ্রামের বাড়িতে রোববার পৌঁছান তিনি।

জানা যায়, উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের লঙ্গুরপাড় গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী ও মাধবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. আসিদ আলির ছোট বোন হাজেরা বিবি অরফে কুঠিল (৪৮)।

গত বুধবার রাতে একই গ্রামে অবস্থিত বড় ভাই আসিদ আলির বাড়ি থেকে রাতের খাবার খেয়ে হাজেরা বিবি প্রতিবেশী রকিব মিয়ার বাড়িতে রাতযাপন করেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে রকিব মিয়ার স্ত্রীকে চা বানানো কথা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যান। রকিব মিয়ার স্ত্রী চা তৈরি করলেও হাজেরা বিবি আর ফেরেননি।

এদিকে সকাল পেরিয়ে দুপুর গড়িয়ে গেলেও হাজেরা বিবি বাড়িতে না ফেরায় হাজেরার ছেলের ঘরের নাতিন শাম্মী (১০) বাড়ির পাশেই দাদা আসিদ আলির বাড়িতে গিয়ে দাদির খোঁজ করে।

আওয়ামী লীগ নেতা আসিদ আলি বলেন, নাতিনের মুখে দাদি বাড়ি ফিরেনি শুনে নাতিনকে সঙ্গে নিয়ে বোনের বাড়িতে গিয়ে দেখি দরজা তালাবদ্ধ, বাহিরের বাতি জ্বলছে। অন্য ঘরে গাভীগুলোও ডাকাডাকি করছে।

তখন তিনি আশপাশে এলাকায় বাড়িঘরগুলোতে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে প্রতিবেশী রকিব মিয়ার স্ত্রী তাকে জানান, রাতে হাজেরা বিবি তাদের বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন, ভোরে চা বানিয়ে রাখতে বলে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি।

পরে সম্ভাব্য সব আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও কোনো সন্ধান না পেয়ে গত শুক্রবার বিকালে কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন আসিদ আলি, যার নং-১৩৬৮।

শনিবার মুঠোফোনে ঘটনাটি ঢাকায় অবস্থানকারী আসিদ আলী তার ভাগিনা (হাজেরার ছেলে) সোহেল আহমেদকে জানান। সোহেল মায়ের নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনে করোনার কারণে লকডাউনে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় নিজেই বাইসাইকেল চালিয়ে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে ১৪ ঘণ্টা পর কমলগঞ্জের লঙ্গুরপাড়স্থ গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। সোহেল বাড়ি পৌঁছেই লোকজন নিয়ে রোববার সারাদিন আশপাশের প্রায় ৫ কিমি এলাকার ঝোঁপঝাড়, খাল, ডোবা ,পুকুর সব আত্মীয়স্বজনের বাড়ি খোঁজ করেও মা হাজেরা বিবির কোনো সন্ধান পাননি।

সোহেলের খালাতো ভাই ভানুগাছ চৌমুহনীর সিএনজিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া জানান, প্রায় ২০-২৫ বছর আগেও একইভাবে তার খালু সোহেলের বাবা মানিক মিয়াও নিখোঁজ হয়েছিলেন। যার সন্ধান এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সোহেল রানা সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। নিখোঁজ গৃহবধূর সন্ধানে চেষ্টা চলমান রয়েছে।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.